::::::::::::::::::::::::::::::::::Welcome Note:::::::::::::::::::::::::::

"সময়ের সিথানে স্বপ্ন নিয়ে প্রতিনিয়ত ঘুমিয়ে থাকি কিংবা দুঃস্বপ্ন নিয়ে জেগে উঠি। একটা সময় ছিল আমার তখন ফড়িং জীবন ছিল। এখন তা বাক্স বন্দী অতীত। ফড়িং এর রঙিন পাখা গুলো এখন বিবর্ণ। কথা গুলো অর্থহীন প্রলাপ ... আচ্ছা প্রলাপ তো অর্থহীন ই হয়, তাই না? কিন্তু আমার যে আর কিছুই নেই... কিছু কল্পনা মেঘের কাছে জমা রেখে ছিলাম... একদিন মেঘ আমাকে কিছু না বলেই উড়ে গেল...আকাশের শেষ প্রান্তে... আমি দিগন্তের পর দিগন্ত ছুটে গেছি... আমার কল্পনার খোঁজে ... না পাইনি... ও তখন বৃষ্টি হয়ে..পাহাড়ের সাথে সন্ধি করে.. সমুদ্রের হয়ে গেছে... আমার তখন আর কিছুই নেই... হয়ত কিছু থাকতে নেই... আমি অন্যের আশ্রয়ে বেঁচে আছি এখন... অন্যের রঙে বিবর্ণ ছবি দেখি... এই নিয়ে আমার এই সাজানো বাড়ী..."

একজন দুর্বল ছাত্র

 
স্যার, আজ আমি আপনার উত্তরপত্রে
রক্ত কি কি উপাদান দ্বারা গঠিত?
শিরা এবং ধমনীর পার্থক্য লিখবো না,
কিংবা আঁকবো না কোন অজ্ঞাত হৃদপিণ্ডের নাম মাত্র চিত্র;
ব্যাখ্যা করবো না মাইটোক্রোন্ডিয়া কিংবা ফুসফুসের কাজ !!
পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে লিখবো না কোন বিশদ উত্তর
আজ এক দুর্বল ছাত্রের মনের কিছু কথা বলবো স্যার।

কাল রাতে আমি আমার নিউরনে কিছু বিজ্ঞানীদের সহস্র বচন ঢুকিয়েছি স্যার,
সহসা ঢুকতে চাইনি ওরা স্যার! টেনে হিড়চে ওদের ঢুকিয়েছি ।
প্রোটোপ্লাজম,সাইটোপ্লাজম,নিউক্লিয়াস,ক্রোমোজোমে,ডি এন এ,আর এন এ
কিছুই বাদ রাখিনি !সব গদ গদ করে গিলেছি ।

একটু কষ্ট হয়েছে বটে স্যার,
কারণ সেদিনের পড়া ফিজিক্সের কিছু সমীকরণ মুখে জড়িয়ে যাচ্ছিল,
নিউক্লিয়াস রূপী আমিতে আমার স্বপ্ন রূপী ইলেকট্রন গুলো
ঘুরে ঘুরে কেবলই চার্জ হারাচ্ছিল...
দেখতে না দেখতেই তা ভবঘুরে প্রোটনে পরিণত হয়ে গেল স্যার।

আইনিষ্টানের E=mc2 সমীকরণ আমার কাছে
ইংরেজি তিনটি অক্ষর ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি স্যার;
তবুও আমি প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম, গতিশক্তি=ভর x (আলোর বেগ)2
কিন্তু পারিনি স্যার,এর পরিবর্তে লিখে এসেছি জীবন=স্বপ্ন x (হতাশার)2 এর  গল্প

আচ্ছা বলুন তো স্যার,
কার মাথায় আপেল পড়লো না বেল পড়লো,
তা জেনে আমার লাভ কি?
কেনই বা তা উপরে না গিয়ে নিচের দিকে পড়লো,
তা ভাববারই বা আমার কি দরকার?
যেখানে আপেলের রঙ রূপী টমেটো দেখলেই পাকস্থলীর গর্জন শোনা যায়
সেখানে এই সব মহাজাগতিক বিষয় চিন্তা করা সত্যিই...
মধ্যবিত্ত এক পরিবারের সন্তানের ক্ষেত্রে বিশাল দ্বায়।
থাক স্যার!! যা গত হয়েছে তা সবসময় জ্ঞাত না হওয়াই ভাল।

একের পর এক মতবাদ মুখস্থ করেছি,
মানসিক কৃতদাসের মত লাইনের পর লাইন মুখস্থ করে নিউরন গুলোকে খাটিয়েছি,
পারিশ্রমিক হিসেবে আপনার দয়া বশত কিছু নাম্বার পেয়েছি, নিজেকে ধন্য ভেবেছি।

স্যার, আপনার সর্বশেষ সাজেশনের আশায় অপেক্ষা করেছি সারা বছর,
সোনার হরিণ রূপী আপনার প্রশ্নে গুলো পড়ে পরীক্ষার খাতায় কোন মতে বমি করে;
জিপিএ ৫ নামক শব্দের মধ্যে বন্দী করেছি আমার মেধাকে !!

নিজের বিশ্বাস এর সাথে প্রতিনিয়ত বিশ্বাস ঘাতকটা করেছি
কখনো নিজেকে বানর কিংবা বন মানুষের আদিরূপ হিসেবে গণ্য করে ,
মনের অজান্তের বারংবার দীক্ষিত হয়েছি স্যার।

স্যার সেই যে ছোট বেলা থেকে 'ধরি' আর 'মনে করি' করে অংক কষতে কষতে
কবে যে নিজের মন কেই হারিয়ে ফেলেছিলাম তাও বুঝতে পারিনি স্যার।
অবশেষে বুঝেছিলাম যখন সাবেরার প্রেমে পড়ি !!
গণিত আমার জীবনে এতটাই প্রভাব ফেলেছিল যে,
ওকে ভালবাসার আগে আমার ধরে নিতে হয়েছিল আমার একটি মন আছে।
দুঃখিত স্যার কিছু মনে করবেন না।
এটা কোন উপপাদ্যের কাল্পনিক কোন লম্বরেখা নয় স্যার,নিতান্তই বাস্তব সত্য।

স্যার এসিড ক্ষারের বিক্রিয়ায় কেন লবণ আর পানি উৎপন্ন হয়
তা আমার মহাশয়দের ধার করা বিদ্যা থেকে প্রমাণ করতে পেরেছি ।
কিন্তু প্রতিনিয়ত আমার মনে স্বপ্ন আর বাস্তবতার যে ক্রিয়া বিক্রিয়া ঘটে চলেছে
আর কেনই বা তা চোখের পানি এবং হতাশার উৎপাদে পরিণত হচ্ছে..
তা বিন্দু মাত্র ব্যাখ্যা করতে পারিনি স্যার,

আমি এতটাই একজন দুর্বল ছাত্র ...

নীল

শুনেছি আকাশের রঙ নাকি নীল
কখনো সময় করে দেখা হয়নি;
সেদিন পূর্ণিমা রাতে হঠাৎ মনে হল
আকাশ টা দেখা দরকার-
কই নীল এর ছিটে ফোঁটাও তো দেখলাম না...
যাই হোক, আমি হয়ত নীল রঙই চিনি না ।
শুনেছি কষ্টের রঙ ও নাকি নীল
এটা নাকি আবার অনুভব করতে হয়;
আমি আমার জীবন থেকে
ঋণ করা কিছু সুখ অনুভব করতে লাগলাম...
সেখানেও নীল খুঁজে পেলাম না
কেউ কেউ বলে ভালবাসার রঙ ও নাকি নীল
তার মানে কি এই দ্বারায়
ভালবাসা আর কষ্ট সমার্থক
কখনো অভিধান খুলে দেখা হয়নি
রঙধনুর ও নাকি কষ্ট আছে
মানে নীল রয়েছে
রয়েছে সমুদ্রের ও নীল
এর জল নাকি নোনা
তবে কি নয়নের জল ও নীল?

সাদা ভাত কিংবা শিউলি ফুলের গল্প

দুই বেলা সাদা ভাত খাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আজ আমার দিন কাটে
অপরের বাগানের শিউলি ফুলের গন্ধে ঘুম ভাঙ্গে
নিজেকে বড় বোঝা মনে হয় এই মহাকালে,

হে দয়াময় ঈশ্বর সব আশীর্বাদ কি তোমার
ঐ কাগজের আবেগে মুড়ানো ফুল ওয়ালাদের?
জানি না, জানতেও চাই না
আর জেনেই বা কি হবে?
সাদা ভাতের মোহ কি তাতে আমার একটুকুও কমবে!!

আমার পাকস্থলীর মিউকোসা স্তরে যখন ক্ষুধার তীব্র আর্তনাদ
পেশী গুলো যখন কান্ত!
ওরা তখন রঙ্গ বিলাসে মত্ত!

মাঝে মাঝে ওদের কান্দ দেখে আমার খুব হাসি পায়
গ্লাসে মুড়ানো কি সব দোকানে ওরা ভীর করে,
বন রুটি সদৃশ একটি বস্তু নিয়ে দেখি তার মধ্যে কি সব লাল লাল রক্ত মিশায়
আমি ভেবে বলি শেষ পর্যন্ত তোদের রক্তই পছন্দ !!
আমি ঠিক উচ্চারণ ও করতে পারি কি যে কঠিন কঠিন শব্দ ওরা খায়,
সেনডুয়েজ, পেষ্টী, রুল কুল, বার্গার আর যে কত কি...
তাই বোধ হয় ওদের আবেগ গুলো ও এত কঠিন

আচ্ছা !
আমি তো গ্লাডিওলাস কিংবা জবা চাইনি
চাইনি রক্তাক্ত কৃষ চূড়া...
চেয়েছি শুধু শিউলি ফুলের সুবাস রূপী সাদা ভাত।

আমি পৃথিবীর সব মায়া ছাড়তে পারি
কিন্তু সাদা ভাতের মায়া কখনো ছাড়তে পারবো না
এই সাদা ভাত আমাকে কাদায়
এই সাদা ভাতই আমাকে হাসায় ।

সাদা ভাতের নেশা যে কত তীব্র
কত স্বাদ তা শুধু সাদা ভাত ওয়ালারা বুঝতে পারে।

শুনেছি ওরা নাকি বছরে এক বার সাদা ভাত খায়
তাও নাকি কি সব টেডি শন
আবার কেউ বলে সখ করেই খায়
তখন আমার নিজেকে খুব গর্বিত মনে এই ভেবে
ওরা ওদের সখ কিংবা টেডি শন একদিন মিটাতে বা ধরে রাখতে পারে
আমি সারা বছর পারি
এই খানেই তো আমার আর ওদের ব্যবধান

কারণ সাদা ভাতের মর্ম সাদা ভাত ওয়ালারাই বুঝে
ওরা কি বুঝবে!!
রক্ত খেতে খেতে ওরা ওদের আসল রক্তকেই ভুলে গেছে ।

একজন পরাজিত প্রেমিকের রক্তের ব্যথিত নীল আর্তনাদ

একজন পরাজিত প্রেমিকের রক্তের ব্যথিত নীল আর্তনাদ
কতটা যে নির্মম হতে পারে তা আমি কখনোই উপলব্ধি করতে পারতাম না,
যদিনা আমি সেই পরাজিত প্রেমিক না হতাম !!

অলিন্দ থেকে নিলয়, নিলয় থেকে ধমনী, ধমনী থেকে ফুসফুস, ফুসফুস থেকে একে একে ছড়িয়ে পড়েছে হৃদপিণ্ড হয়ে সমস্ত দেহে
পরাজিত প্রেমিকের ব্যথিত নীল আর্তনাদই রক্ত!!

কোন কিছুই বাদ রাখেনি সে,
তন্ন তন্ন করে খুঁজেছে তার হারানো কোন এক অপরিণত অস্তিত্বকে
খুঁজেছে তার অপূর্ণাঙ্গ প্রেমের অতীত যাতনাকে,
বিপন্ন সেই মুহূর্তকে,অকথ্য সেই কাহিনীকে,অব্যক্ত সেই ভাষাকে
বিকৃত সেই আবেগ, ধ্বংসাত্মক সেই অনুভূতি,অমার্জনীয় সেই পরিণতিকে
কিছুই বাদ রাখেনি সে...
শুধু মাত্র পরাজিত প্রেমিকের নীল আর্তনাদই রক্তকে
বিন্দু মাত্র শান্ত করার জন্য!!

আমার নিউরনে প্রতিটি সিন্যাপসে সিন্যাপসে তখন এক অস্বাভাবিক স্থবিরতা,
অবিকল অতীতের কোন অপূর্ণ স্বপ্ন দেখার সেকি হাহাকারে নিত্য আমার নিষ্ফলা নেত্রের!!
প্রতিটি শিরায় শিরায় প্রেমিকার কাছে প্রণয় ভিক্ষার সে কি মর্মান্তিক দৃশ্য!!

না! এ কোন ট্যাজিডি উপন্যাস কিংবা কোন নাটকে সংলাপ নয়,
নয় কোন মেগা সিরিয়ালের খণ্ড কোন চিত্রনাট্য!!
এ শুধু পরাজিত প্রেমিকের নীল আর্তনাদই রক্তের নিশ্চুপ চিৎকার মাত্র।

তবুও আমার চুপসে যাওয়া চলবে না
শ্রাবণ রাতে বিপুল জোছনায় খুঁজে ফিরতে হবে হারানো শৈশবকে
শিশিরে ভেজা ঘাস ফুলের পরশ মায়ায় শিহরিত করতে হবে ব্যথিত রক্তকে,
পাড় ভাঙ্গা কোন এক নদীর লিলুয়া বাতাসে উদাস করতে হবে আপন মন
চিত্রকল্পে আকা ডানা মেলা গাংচিল দেখে অবাক করতে হবে এই দুইটি চোখ।

এত কিছুর পরও যেন কোথায় এক বিরাজমান শূন্যতা,বিষণ্ণতা
পরাজিত প্রেমিকের ব্যথিত নীল আর্তনাদই রক্তের নির্মম ভাবাবেগ হয়ত !!

নিয়ন বাতি, ল্যাম্পপোস্ট এবং কিছু ঝি ঝি পোকা !!

তবুও এখানে এক দুষ্কৃতির চিহ্ন রয়ে গেছে ,
রয়ে গেছে রাশি রাশি ঘৃণা কিংবা মায়া।

বিশ্বাস করুন,
তবুও আমি তাকিয়ে রই!!
ঐ ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাড়িয়ে থাকা স্বপ্ন বেচা মানুষ গুলোর দিকে!!
যেখানে নিয়ন আলোয় কিছু ঝি ঝি পোকারা খেলে।

বিছানা কিংবা চকচকে পিচে,
কাঁথা কিংবা ফিরোজা রঙের পলিথিনে,
কখনো জোছনা হাসে একটু উকি দিয়ে,
কখনো মেঘ গুলো কাঁদে মোমের মত গলে!!

তবুও বলেনা কেউ এখানে স্পষ্ট কথা,
মিছে মিছে হয় না বোকা !!
শহরটাই যেন ল্যাম্পপোস্টে নিয়ন আলোয় জমানো ঝি ঝি পোকা !!

কুহক

বেওয়ারিশ কুহকের চোখে নিঃস্পৃহ ললনা,
বিপন্ন স্পৃহার বিপরীতে ইন্দ্রের যন্ত্রণা !
মিথ্যে স্পন্দন ! সুপ্ত যাতনা !

নেই ! কিছুই নেই !
শুধুই !
কুহকের প্রতিবিম্বে লাঞ্ছনা !

তবুও মনে হয় কে যেন ডাকে অদূর হতে,
অস্পষ্ট স্বরে ! অনিত্য চিত্তে !

অতঃপর ,
স্বপ্ন ভাঙ্গে নৈঃশব্দ্যের ঘোরে,
অবরুদ্ধ নোনা জলে !
ভেসে যায় শূন্য ঘরে !
অপূর্ণ সময়ে !

দৌড় !

তোমাকে আমি যেদিন প্রথম 'ভালবাসি' বলেছিলাম,
তুমি দৌড়ে চলে গিয়েছিলে...
হঠাৎ তুমি থামলে ! পিছন ফিরলে ! লাজুক মুখে বললে "আমিও" !
আবার তোমার সেই আশ্চর্য জনক দৌড় !

তুমি আমাকে যেদিন শেষ বারের মত "বিদায়" বলেছিলে,
আমি সেদিন দৌড়ে চলে গিয়েছিলাম
হঠাৎ আমি থামলাম ! পিছনে ফিরলাম ! বিষাদ কণ্ঠে বললাম "ভাল থেকো"
আবার আমার সেই আশ্চর্য জনক দৌড় !

 জীবনটাই যেন !
দৌড় আর দৌড় !

পাপ প্রণয়ের সঙ্গম

পাপ এবং প্রণয়ের সঙ্গমে...
আঙ্গুলের ভাঁজে ভাঁজে স্ফুটিত মাংস কিংবা শুভ্র কাশ,
নীলাভ ড্রিম লাইটের আভায় নিষিদ্ধ ছায়া কাঁপে কংক্রিটের কামরায়,
সম্ভ্রম হারানো কুঁচকানো চাদর একটি ঝলসানো রোদের অপেক্ষায়,
ঘন নিঃশ্বাসের তরঙ্গে ভাসে ভবিষ্যৎ বিশ্বাস ভাঙ্গনের আগত আর্তনাদ !!

প্রণয়ের গভীরতা মাপে পাপ !

পরাভূত পারফিউম পাপ

অবশেষে !
আধার নতজানু হয় রুমানা নগ্নতার কাছে,
অবিশ্বাসের দ্রাঘিমা ঘেঁষে
দ্বিপদী নিঃশ্বাসে ।

শুধু পার্থক্য সর্বনামে,
উদাম স্ফটিক অনুভূতির অনুসর্গের অবয়বে,
নক্তান্ধ নক্তের নিয়নে !!

এভাবে,
আঙ্গুলের বাকে খসে পড়ে রুইতনের বিবি !
টেক্কা হারে শুকনো ঘামে,
পরাভূত পারফিউম পাপে !

কবি

এভাবে সাঁঝের মায়া সাঙ্গ করে,
হেঁটেছি নিশীথ নৈশব্দের নক্ষত্রের পথ ধরে,
ব্যথার রণক্ষেত্র রচনা করেছি অক্ষরে অক্ষরে !!

ভুল পাঠকের,
নিপুণ করতালিতে,
হয়েছি কবি !

দুঃখিত !
তোমার জন্য অবশিষ্ট কেবল
আর্তনাদের ছবি !

লিফলেট

আর্তনাদের মার্কেটিং বুঝ ?
অনশনের অভিনয়ের চিত্রায়ন?
কিংবা ক্ষুধার ফটোগ্রাফির প্রধান বক্তা হওয়ার সার্থকতা !!

সেন্টিমেন্টাল অথবা হুজুক শব্দের সাথে কতটুকু পরিচিত তুমি?
প্রতিশ্রুতির সাথে বাস্তবায়নের সামঞ্জস্যতা

বেশ্যা ও বউ এর কণ্ঠের সঙ্গে কোরাস গাইতে পারো?
নান্দনিক নগ্নতা যে শিল্প ! তা জান?

তবেই তুমি রাজনীতি বুঝ ?

দুঃখিত সার আমি সামান্য কবি,
আমি আপনার বিষাক্ত রক্তের নির্মমতার গভীরতা খুঁজি !!

এ সময় ! গোধূলি কিংবা অবেলায় !

ছুঁয়ে যায় !
মিহি মিহি মায়ায় !
স্তব্ধ নীল নীলিমায় !
বিরহের মিছিলের,স্তব্ধ শ্লোগানে !
ভাঙ্গা আলোর সহস্র ছায়ায়,
কাব্যে জড়িয়ে ব্যথা,
আর্তনাদের আশ্রিত আঁধারের,
উড়ন্ত ফড়িং এর কৌতূহলী রঙে
কেঁদেছি চুপিসারে ঐ করিডোরে
উন্মাদের উদভ্রান্ত বিদীর্ণ চিৎকারে !

স্মৃতির সুস্পষ্ট ছোবলে,
কুচি কুচি করে কেটেছি বিভ্রান্ত অনুভূতি,
মৃত্যু নয়, শূন্যতার সাথে সন্ধি করেছি
ইতিহাসের ভয়ে।

এভাবে,
ছুঁয়ে যায় !
মিহি মিহি মায়ায় !
স্তব্ধ নীল নীলিমায় !

এ সময় ! গোধূলি কিংবা অবেলায় !

শহর !! শূণ্য !! শকুন !! শয্যা !! শরীর !!

এখানে !
হ্যাঁ ঠিক এখানে !
আমি যত বারই কান পেতেছি শুধুই আঁধার ভাঙ্গার আওয়াজ শুনেছি !
দূর ! বহুদূরে বিষণ্ণ নিয়নে শকুনের শূন্য খেলা দেখেছি !

অথই জলে ভিজেছে, কিংবা
মরুভূমি হয়ে থেমেছে !

পাপের আকাশে তখন গোটা শহর ঘুমন্ত !
ঘুঙুরে আওয়াজে শরীর গুলো ক্লান্ত !

শয্যাই সকল সুখ ক্ষান্ত !!

খোদার কসম ! এ পাপ ছিল, পাপ !!

মৃন্ময়ী মাঝ রাতে জোছনা আঁকা প্রদীপের ভাঁজে সিথানে সুনীল সাঁঝ !
খোদার কসম ! এ ছিল নীলাভ ভুলের ঈশ্বরের শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ অভিশাপ !
আহ ! নিরেট ঠোটে গহীনে চির ধরা বুকের শরীরে,
এক আঁধার এঁকেছিল, আরেক আঁধারের কারুকাজ !

এ কোন ক্লাইম্যাক্স এর রাত !

খোদার কসম !
এ পাপ ছিল, পাপ !

শঙ্খনাদ

সিথিলা সমুদ্র স্নানে নিঃসঙ্গতা অন্তরীপে দাড়িয়ে...
আযান আলোয় ভাঙ্গা স্বপ্নে ...
কেঁদেছি পাঁজর আছড়ানো অভিমানে !

খুঁজেছি !
তবে হারিয়ে ! আলোর শেষে !
উদভ্রান্ত শূন্যতা গুলোকে সিথানের বুকে আঁকড়ে ধরে !!
আপন অনুভূতির রসায়নে !

তবুও আমি হেঁটেছি,
স্মৃতির সিঁড়ি বেয়ে নোনা জলের পথ ধরে,
স্নিগ্ধ গাংচিল সেজে !!

দূরে, আরও দূরে
একের পর এক ঢেউ পেরিয়ে !!
থেমেছি আমি,
শুভ্রতার শেষ পদচিহ্নের স্পর্শে।

অতঃপর,
অনাবিল আকাশের দিকে তাকিয়ে,
এপিটাফে হাঁটু গেড়ে বসে,
শূন্যতার প্রতিবিম্ব ভেঙ্গেছি নীলাভ আর্তনাদে...

স্পর্শটিকে নিছক দুঃস্বপ্ন ভেবে !!

প্রিয়তা ! একি জীবন

আজকাল নিজেকেও বিশ্বাস করতে ভীষণ ভয় হয়, ভীষণ !
আমার কবিতার নির্বোধ শব্দেরা হঠাৎ হঠাৎ স্ব শব্দে হেঁসে উঠে।
আমাকে ব্যঙ্গ করে। আমার অতীত গুলোকে কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বলে ।
আমার ভীষণ লজ্জা হয়। মাথার ভিতর কি যেন খেলে !

প্রিয়তা !
আমার একমাত্র কবিতার একনিষ্ঠ পাঠিকা ।
নিঃসঙ্গতার নৈশব্দের উৎসবের প্রধান বক্তা আমি হতে চাইনি !
একবার দেখুন ! কেবল একবার ভাল করে দেখুন ...
আমার কবিতার শব্দেরা আজ কেমন নির্মম হয়ে গেছে !


মনে করুন প্রিয়তা,
নিয়নে নির্বাক নিশ্চুপ কোলাহল হয়ে,
একদিন এই শহরের বুকে আমার প্রথম বেওয়ারিশ বর্ষা হওয়ার গল্প !
নাগরিক নগ্নতার দেয়াল দেয়ালে আর্তনাদের পেরেক ঢুকিয়ে কবি হওয়ার স্বপ্ন !
রূপালী রুক্ষতার অনিমেষ আঁধারে পরাজিত দিন গুলোর কথা !
অনন্ত নীলের উপেক্ষিত উপমার স্থবিরতা !

প্রিয়তা !
একি জীবন ! নাকি,
অনাবিল ব্যথার এক ডুব সাতার ?

পারমিতা !

কে যেন কবে !
হঠাৎ ভুল করে বেভুল সুরে ডাকে
শূন্যতার শৃঙ্খলিত কোলাহলে ধরে,
নিথর নষ্ট নিস্পলক নক্ষত্রের অন্তরালে !!

তার কথা বলবো কি আর !
সে তো বহুকাল আগেই গিয়েছে হারিয়ে ,
অবাধ্য অগ্রাহণের আঁধারের এপিটাফ অক্ষরে,
ভুল ইশারার মৌন নীলের অনাকাঙ্ক্ষিত উৎসবে !!

এখানে অবশিষ্ট কেবল,
সময়ের সিথানে সুস্মিতা স্মৃতির সাদা সাদা দাগ,
অনুচ্চারিত অতন্দ্র স্থবির আর্তনাদ !

পারমিতা !
তোমায় ছুঁয়ে !
করেছি পাপ !

আমি অবিনাশী অভিশাপ !

শহর এখন অসভ্য হতে শিখেছে

মিথ্যে কথার শহরে
এখন অবিশ্বাসের বাধ্যবাধকতা
বাতাসের ললাটে
করিডোর হতে ক্যারোটে

খোপার ফুল খুলে
ওর সব করে ভুল
টিএসসির ধুলোয় উড়ে
বেওয়ারিস রমনীর চুল

রঙের ক্ষেতে ঘুণ ধরেছে
প্যাকেটের দাম বেড়েছে
শহর এখন
অসভ্য হতে শিখেছে !!

অদ্ভুত বিষণ্ণ মৃত্যুর মৃত রঙ

দূর আকাশের বেলাভূমিতে আমার সমর্পিত সকল কান্না
নগ্ন শূন্যতার দোমড়ানো খেলাঘর সেঁজে প্রতিনিয়ত
পরাজিত হয় নির্ঘুম নিশ্চুপ নিঃস্ব নৈঃশব্দ্যের কাছে

আগন্তক আর্তনাদের কপাটে অবরুদ্ধ
তোমার ছায়ার মত অবিকল
অদেখা স্মৃতির মত উজ্জ্বল হয়ে
নীলচে বেগুনী রঙে অবশ হয় রাত্রি

সহস্র কোলাহল জুড়ে তখনও জ্বলে হলুদ বাতি
চিবুক ঘেঁষে বুকের ভাঁজে ভাঁজে জাগে হিংস্র অনুভূতি
নিঃশ্বাসের তরঙ্গের তীব্রতা, ভীষণ অন্যরকম !

অদ্ভুত বিষণ্ণ মৃত্যুর মৃত রঙ

কল্পলোকের গল্প

আচ্ছা, তোমার কি সেই দিন গুলোর কথা মনে পড়ে..
কড়েতে কড়ে বন্ধী করে স্মৃত চকচকে নোনা বালির তীরে দুজনে দাড়িয়ে,
কিভাবে সূর্যাস্তের হাওয়ায়, হাঁটুতে জোছনা নামাতাম !!

আধার গুলো যতই আমাদের কাছে আঁকড়ে ধরতও !
সমুদ্রের গর্জন গুলো যতই ক্রমশই চেপে আসতো,
তুমি ততই আমার কড়ে গুলোকে শক্ত করে ধরতে !
হঠাৎ লেপটে দিতে শুভ্র হাতে তোমার সমস্ত অনুভূতি ;
আমার বুকের ঠিক মধ্যে খানে ! অনেকটা নৈঃশব্দ্যে !

শেষ বিকেলে ক্যাফেটেরিয়াতে সব বন্ধুরা মিলে যখন আড্ডা দিতাম,
মুগ্ধ হয়ে তোমার চোখেতে গরম চায়ের উষ্ণ ধোঁয়া উড়াতাম।
ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসি জমা করে …
টেবিলের নিচে খেলতাম বুড়ো আঙ্গুলে আঙ্গুলে অদ্ভুত সেই খেলা !

একদিন তো ওদের কাছে প্রায়ই ধরাই পড়ে গিয়েছিলাম,
অল্পের জন্য কোন মতে, দুজনে 'লাল পিপড়ার' কথা বলে রক্ষা পেলাম !

আচ্ছা ! তুমি কি এখনো সেই নীল জামদানীটা পড়ো,
আরে, হ্যাঁ ! সেই শাড়ীটা ! যেই শাড়িটা কেনার জন্য,
আমি নয় নয়টি মাস প্রাইভেট ফাকি দিয়ে টাকা জমিয়ে ছিলাম,
বিশ্বাস কর! আমার এতটুকু ও কষ্ট হয়নি,
আমার কাছে মনে হয়েছে যেন, সে দিন একটি যুদ্ধ জয় করে ছিলাম !!

হঠাৎ ! তুমি !
কেমন করে যেন, হারিয়ে গেলে!!... সাথে সাথে হারিয়ে গেল সকল স্বপ্ন!!
পানসে করে দিয়ে গেলে আমার সব অনুভূতিকে,
মজিদ মামার হোটেলের সিঙ্গারার দামে বিক্রি হয়ে গেল সব ইচ্ছে গুলো,
সমুদ্রের তীরের নোনা বালি গুলোকে আমার কাছে মনে হতে লাগলো ,
কখনো ধুলো কখনো বা স্তব্ধ ফেলে আসা স্মৃতির জ্বলন্ত মরীচিকা !!

জানি !
তুমি আর আসবে না !
আচমকা ছড়াবে না পেছন থেকে শিউলি কিংবা বকুল !
তবু তুমি বেচে রয়েছ আমাতে,
একটি কল্পলোকের গল্প হয়ে !!

বৃষ্টি, তোমাকে !


বৃষ্টি তোমাকে আজ খুব কাছ থেকে ছুঁয়েছি !
ভীষণ কাছ থেকে !
ঠিক যেমন আমি ছুঁয়েছিলাম আমার প্রথম প্রেমের প্রথম স্পর্শকে !

জান বৃষ্টি ?
এই স্পর্শ একদিন আমার বুকেতে অসময়ে যুবক হওয়ার স্পর্ধা এনে দিয়েছিল !
কীভাবে একাকীত্বের যন্ত্রণা অনুভব করতে হয় তা শিখিয়েছিল !
শূন্যতার ও যে একটি নিজস্ব ব্যাকরণ বোধ আছে তাও জানিয়েছিল !

তোমার মনে আছে বৃষ্টি !
শেষ আষাঢ়ের আমন্ত্রণে তুমি কেঁদে যখন অভিমান ভাঙ্গলে ,
সেদিন মেঘেদের  মনে একধরনের রহস্যময় চাঞ্চল্য এনে দিয়েছিলে,
বদ্ধ হুকের রুদ্ধ ভালবাসায় প্যাডেলের গতি তখন বাস্তবিক ভাবেই অসীম ছিল !

বৃষ্টি ! তুমি আজ আবার এলে !
নিছক একটি লিলুয়া অতীত হয়ে !!

বৃষ্টি !! তোমাকে আজ আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি !! খুব কাছ থেকে !
যে ভাবে দেখেছিলাম ওর চোখে আমার শেষ স্বপ্ন গুলোকে... !!

।।