::::::::::::::::::::::::::::::::::Welcome Note:::::::::::::::::::::::::::

"সময়ের সিথানে স্বপ্ন নিয়ে প্রতিনিয়ত ঘুমিয়ে থাকি কিংবা দুঃস্বপ্ন নিয়ে জেগে উঠি। একটা সময় ছিল আমার তখন ফড়িং জীবন ছিল। এখন তা বাক্স বন্দী অতীত। ফড়িং এর রঙিন পাখা গুলো এখন বিবর্ণ। কথা গুলো অর্থহীন প্রলাপ ... আচ্ছা প্রলাপ তো অর্থহীন ই হয়, তাই না? কিন্তু আমার যে আর কিছুই নেই... কিছু কল্পনা মেঘের কাছে জমা রেখে ছিলাম... একদিন মেঘ আমাকে কিছু না বলেই উড়ে গেল...আকাশের শেষ প্রান্তে... আমি দিগন্তের পর দিগন্ত ছুটে গেছি... আমার কল্পনার খোঁজে ... না পাইনি... ও তখন বৃষ্টি হয়ে..পাহাড়ের সাথে সন্ধি করে.. সমুদ্রের হয়ে গেছে... আমার তখন আর কিছুই নেই... হয়ত কিছু থাকতে নেই... আমি অন্যের আশ্রয়ে বেঁচে আছি এখন... অন্যের রঙে বিবর্ণ ছবি দেখি... এই নিয়ে আমার এই সাজানো বাড়ী..."

নিয়ন বাতি, ল্যাম্পপোস্ট এবং কিছু ঝি ঝি পোকা !!

তবুও এখানে এক দুষ্কৃতির চিহ্ন রয়ে গেছে ,
রয়ে গেছে রাশি রাশি ঘৃণা কিংবা মায়া।

বিশ্বাস করুন,
তবুও আমি তাকিয়ে রই!!
ঐ ল্যাম্পপোস্টের নিচে দাড়িয়ে থাকা স্বপ্ন বেচা মানুষ গুলোর দিকে!!
যেখানে নিয়ন আলোয় কিছু ঝি ঝি পোকারা খেলে।

বিছানা কিংবা চকচকে পিচে,
কাঁথা কিংবা ফিরোজা রঙের পলিথিনে,
কখনো জোছনা হাসে একটু উকি দিয়ে,
কখনো মেঘ গুলো কাঁদে মোমের মত গলে!!

তবুও বলেনা কেউ এখানে স্পষ্ট কথা,
মিছে মিছে হয় না বোকা !!
শহরটাই যেন ল্যাম্পপোস্টে নিয়ন আলোয় জমানো ঝি ঝি পোকা !!

কুহক

বেওয়ারিশ কুহকের চোখে নিঃস্পৃহ ললনা,
বিপন্ন স্পৃহার বিপরীতে ইন্দ্রের যন্ত্রণা !
মিথ্যে স্পন্দন ! সুপ্ত যাতনা !

নেই ! কিছুই নেই !
শুধুই !
কুহকের প্রতিবিম্বে লাঞ্ছনা !

তবুও মনে হয় কে যেন ডাকে অদূর হতে,
অস্পষ্ট স্বরে ! অনিত্য চিত্তে !

অতঃপর ,
স্বপ্ন ভাঙ্গে নৈঃশব্দ্যের ঘোরে,
অবরুদ্ধ নোনা জলে !
ভেসে যায় শূন্য ঘরে !
অপূর্ণ সময়ে !

দৌড় !

তোমাকে আমি যেদিন প্রথম 'ভালবাসি' বলেছিলাম,
তুমি দৌড়ে চলে গিয়েছিলে...
হঠাৎ তুমি থামলে ! পিছন ফিরলে ! লাজুক মুখে বললে "আমিও" !
আবার তোমার সেই আশ্চর্য জনক দৌড় !

তুমি আমাকে যেদিন শেষ বারের মত "বিদায়" বলেছিলে,
আমি সেদিন দৌড়ে চলে গিয়েছিলাম
হঠাৎ আমি থামলাম ! পিছনে ফিরলাম ! বিষাদ কণ্ঠে বললাম "ভাল থেকো"
আবার আমার সেই আশ্চর্য জনক দৌড় !

 জীবনটাই যেন !
দৌড় আর দৌড় !

পাপ প্রণয়ের সঙ্গম

পাপ এবং প্রণয়ের সঙ্গমে...
আঙ্গুলের ভাঁজে ভাঁজে স্ফুটিত মাংস কিংবা শুভ্র কাশ,
নীলাভ ড্রিম লাইটের আভায় নিষিদ্ধ ছায়া কাঁপে কংক্রিটের কামরায়,
সম্ভ্রম হারানো কুঁচকানো চাদর একটি ঝলসানো রোদের অপেক্ষায়,
ঘন নিঃশ্বাসের তরঙ্গে ভাসে ভবিষ্যৎ বিশ্বাস ভাঙ্গনের আগত আর্তনাদ !!

প্রণয়ের গভীরতা মাপে পাপ !

পরাভূত পারফিউম পাপ

অবশেষে !
আধার নতজানু হয় রুমানা নগ্নতার কাছে,
অবিশ্বাসের দ্রাঘিমা ঘেঁষে
দ্বিপদী নিঃশ্বাসে ।

শুধু পার্থক্য সর্বনামে,
উদাম স্ফটিক অনুভূতির অনুসর্গের অবয়বে,
নক্তান্ধ নক্তের নিয়নে !!

এভাবে,
আঙ্গুলের বাকে খসে পড়ে রুইতনের বিবি !
টেক্কা হারে শুকনো ঘামে,
পরাভূত পারফিউম পাপে !

কবি

এভাবে সাঁঝের মায়া সাঙ্গ করে,
হেঁটেছি নিশীথ নৈশব্দের নক্ষত্রের পথ ধরে,
ব্যথার রণক্ষেত্র রচনা করেছি অক্ষরে অক্ষরে !!

ভুল পাঠকের,
নিপুণ করতালিতে,
হয়েছি কবি !

দুঃখিত !
তোমার জন্য অবশিষ্ট কেবল
আর্তনাদের ছবি !

লিফলেট

আর্তনাদের মার্কেটিং বুঝ ?
অনশনের অভিনয়ের চিত্রায়ন?
কিংবা ক্ষুধার ফটোগ্রাফির প্রধান বক্তা হওয়ার সার্থকতা !!

সেন্টিমেন্টাল অথবা হুজুক শব্দের সাথে কতটুকু পরিচিত তুমি?
প্রতিশ্রুতির সাথে বাস্তবায়নের সামঞ্জস্যতা

বেশ্যা ও বউ এর কণ্ঠের সঙ্গে কোরাস গাইতে পারো?
নান্দনিক নগ্নতা যে শিল্প ! তা জান?

তবেই তুমি রাজনীতি বুঝ ?

দুঃখিত সার আমি সামান্য কবি,
আমি আপনার বিষাক্ত রক্তের নির্মমতার গভীরতা খুঁজি !!

এ সময় ! গোধূলি কিংবা অবেলায় !

ছুঁয়ে যায় !
মিহি মিহি মায়ায় !
স্তব্ধ নীল নীলিমায় !
বিরহের মিছিলের,স্তব্ধ শ্লোগানে !
ভাঙ্গা আলোর সহস্র ছায়ায়,
কাব্যে জড়িয়ে ব্যথা,
আর্তনাদের আশ্রিত আঁধারের,
উড়ন্ত ফড়িং এর কৌতূহলী রঙে
কেঁদেছি চুপিসারে ঐ করিডোরে
উন্মাদের উদভ্রান্ত বিদীর্ণ চিৎকারে !

স্মৃতির সুস্পষ্ট ছোবলে,
কুচি কুচি করে কেটেছি বিভ্রান্ত অনুভূতি,
মৃত্যু নয়, শূন্যতার সাথে সন্ধি করেছি
ইতিহাসের ভয়ে।

এভাবে,
ছুঁয়ে যায় !
মিহি মিহি মায়ায় !
স্তব্ধ নীল নীলিমায় !

এ সময় ! গোধূলি কিংবা অবেলায় !

শহর !! শূণ্য !! শকুন !! শয্যা !! শরীর !!

এখানে !
হ্যাঁ ঠিক এখানে !
আমি যত বারই কান পেতেছি শুধুই আঁধার ভাঙ্গার আওয়াজ শুনেছি !
দূর ! বহুদূরে বিষণ্ণ নিয়নে শকুনের শূন্য খেলা দেখেছি !

অথই জলে ভিজেছে, কিংবা
মরুভূমি হয়ে থেমেছে !

পাপের আকাশে তখন গোটা শহর ঘুমন্ত !
ঘুঙুরে আওয়াজে শরীর গুলো ক্লান্ত !

শয্যাই সকল সুখ ক্ষান্ত !!

খোদার কসম ! এ পাপ ছিল, পাপ !!

মৃন্ময়ী মাঝ রাতে জোছনা আঁকা প্রদীপের ভাঁজে সিথানে সুনীল সাঁঝ !
খোদার কসম ! এ ছিল নীলাভ ভুলের ঈশ্বরের শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ অভিশাপ !
আহ ! নিরেট ঠোটে গহীনে চির ধরা বুকের শরীরে,
এক আঁধার এঁকেছিল, আরেক আঁধারের কারুকাজ !

এ কোন ক্লাইম্যাক্স এর রাত !

খোদার কসম !
এ পাপ ছিল, পাপ !

শঙ্খনাদ

সিথিলা সমুদ্র স্নানে নিঃসঙ্গতা অন্তরীপে দাড়িয়ে...
আযান আলোয় ভাঙ্গা স্বপ্নে ...
কেঁদেছি পাঁজর আছড়ানো অভিমানে !

খুঁজেছি !
তবে হারিয়ে ! আলোর শেষে !
উদভ্রান্ত শূন্যতা গুলোকে সিথানের বুকে আঁকড়ে ধরে !!
আপন অনুভূতির রসায়নে !

তবুও আমি হেঁটেছি,
স্মৃতির সিঁড়ি বেয়ে নোনা জলের পথ ধরে,
স্নিগ্ধ গাংচিল সেজে !!

দূরে, আরও দূরে
একের পর এক ঢেউ পেরিয়ে !!
থেমেছি আমি,
শুভ্রতার শেষ পদচিহ্নের স্পর্শে।

অতঃপর,
অনাবিল আকাশের দিকে তাকিয়ে,
এপিটাফে হাঁটু গেড়ে বসে,
শূন্যতার প্রতিবিম্ব ভেঙ্গেছি নীলাভ আর্তনাদে...

স্পর্শটিকে নিছক দুঃস্বপ্ন ভেবে !!

প্রিয়তা ! একি জীবন

আজকাল নিজেকেও বিশ্বাস করতে ভীষণ ভয় হয়, ভীষণ !
আমার কবিতার নির্বোধ শব্দেরা হঠাৎ হঠাৎ স্ব শব্দে হেঁসে উঠে।
আমাকে ব্যঙ্গ করে। আমার অতীত গুলোকে কানের কাছে এসে ফিস ফিস করে বলে ।
আমার ভীষণ লজ্জা হয়। মাথার ভিতর কি যেন খেলে !

প্রিয়তা !
আমার একমাত্র কবিতার একনিষ্ঠ পাঠিকা ।
নিঃসঙ্গতার নৈশব্দের উৎসবের প্রধান বক্তা আমি হতে চাইনি !
একবার দেখুন ! কেবল একবার ভাল করে দেখুন ...
আমার কবিতার শব্দেরা আজ কেমন নির্মম হয়ে গেছে !


মনে করুন প্রিয়তা,
নিয়নে নির্বাক নিশ্চুপ কোলাহল হয়ে,
একদিন এই শহরের বুকে আমার প্রথম বেওয়ারিশ বর্ষা হওয়ার গল্প !
নাগরিক নগ্নতার দেয়াল দেয়ালে আর্তনাদের পেরেক ঢুকিয়ে কবি হওয়ার স্বপ্ন !
রূপালী রুক্ষতার অনিমেষ আঁধারে পরাজিত দিন গুলোর কথা !
অনন্ত নীলের উপেক্ষিত উপমার স্থবিরতা !

প্রিয়তা !
একি জীবন ! নাকি,
অনাবিল ব্যথার এক ডুব সাতার ?

পারমিতা !

কে যেন কবে !
হঠাৎ ভুল করে বেভুল সুরে ডাকে
শূন্যতার শৃঙ্খলিত কোলাহলে ধরে,
নিথর নষ্ট নিস্পলক নক্ষত্রের অন্তরালে !!

তার কথা বলবো কি আর !
সে তো বহুকাল আগেই গিয়েছে হারিয়ে ,
অবাধ্য অগ্রাহণের আঁধারের এপিটাফ অক্ষরে,
ভুল ইশারার মৌন নীলের অনাকাঙ্ক্ষিত উৎসবে !!

এখানে অবশিষ্ট কেবল,
সময়ের সিথানে সুস্মিতা স্মৃতির সাদা সাদা দাগ,
অনুচ্চারিত অতন্দ্র স্থবির আর্তনাদ !

পারমিতা !
তোমায় ছুঁয়ে !
করেছি পাপ !

আমি অবিনাশী অভিশাপ !

শহর এখন অসভ্য হতে শিখেছে

মিথ্যে কথার শহরে
এখন অবিশ্বাসের বাধ্যবাধকতা
বাতাসের ললাটে
করিডোর হতে ক্যারোটে

খোপার ফুল খুলে
ওর সব করে ভুল
টিএসসির ধুলোয় উড়ে
বেওয়ারিস রমনীর চুল

রঙের ক্ষেতে ঘুণ ধরেছে
প্যাকেটের দাম বেড়েছে
শহর এখন
অসভ্য হতে শিখেছে !!

অদ্ভুত বিষণ্ণ মৃত্যুর মৃত রঙ

দূর আকাশের বেলাভূমিতে আমার সমর্পিত সকল কান্না
নগ্ন শূন্যতার দোমড়ানো খেলাঘর সেঁজে প্রতিনিয়ত
পরাজিত হয় নির্ঘুম নিশ্চুপ নিঃস্ব নৈঃশব্দ্যের কাছে

আগন্তক আর্তনাদের কপাটে অবরুদ্ধ
তোমার ছায়ার মত অবিকল
অদেখা স্মৃতির মত উজ্জ্বল হয়ে
নীলচে বেগুনী রঙে অবশ হয় রাত্রি

সহস্র কোলাহল জুড়ে তখনও জ্বলে হলুদ বাতি
চিবুক ঘেঁষে বুকের ভাঁজে ভাঁজে জাগে হিংস্র অনুভূতি
নিঃশ্বাসের তরঙ্গের তীব্রতা, ভীষণ অন্যরকম !

অদ্ভুত বিষণ্ণ মৃত্যুর মৃত রঙ